মালদা

মাধ্যমিকে ভালো ফল করেও আর্থিক দুশ্চিন্তায় স্বপ্ন থেকে বহু দুরে ছাত্রী

বাবা হার্টের রোগে আক্রান্ত। মা সামান্য চায়ের দোকানী। মায়ের সাথে চায়ের দোকান সামলে গোটা সংসারের হাল ধরার পাশাপাশি মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল করে তাক লাগিয়ে দিল কলিগ্রাম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী স্নেহা দাস। 

জানা যায়, চাঁচল ১ নং ব্লকের কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কলিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা তথা পেশায় চা বিক্রেতা বিশ্বজিৎ দাসের বড় মেয়ে স্নেহা দাস চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। বাড়ির সামনের রাস্তায় এক চিলতে টিনের ছাউনিতে চায়ের দোকান চালাতেন বিশ্বজিৎ দাস। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে হার্টের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজিৎ দাস এখন শয্যাশায়ী। স্বামীর আসুস্থতার কারণে বর্তমানে এই দোকানটির হাল ধরেছেন তার স্ত্রী প্রতিমা দেবী। আর এই দোকান চালাতে মায়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে হাত লাগান স্নেহা। পরিবারের এমন পরিস্থিতির মাঝে চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল স্নেহা দাস। 

ইতিমধ্যে বেড়িয়েছে মাধ্যমিকের ফলাফল। সেখানে দেখা যায়, বিশ্বজিৎ দাসের মেয়ে স্নেহা দাস ৬২২ নম্বর পেয়ে প্রথম বিভাগ পেয়ে উত্তির্ন হয়েছে। আগামীতে স্নেহা বিঞ্জান বিভাগ নিয়ে পড়তে চাই। বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তার। কিন্তু উচ্চ শিক্ষা ও ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারের বেহাল আর্থিক অবস্থা। টাকার অভাবে বাবার চিকিৎসায় করানো সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে তার উচ্চ শিক্ষার জন্য অর্থ আসবে কি ভাবে ? এই চিন্তায় কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে স্নেহা দাসকে।

এই বিষয়ে স্নেহা দাস জানায়, আগামী দিনে সে বিঞ্জান নিয়ে পড়াশোনা করে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তার। কিন্তু অভাবের সংসারের খরচ জোগাতে মায়ের সাথে হাত লাগিয়ে চায়ের দোকান চালায় সে। যার ফলে তার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন থাকলেও বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। যদি সরকার সাহায্য করে তবে তার স্বপ্ন বাস্তবের রূপ পাবে না হলে তার আগামী দিনের পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিবে বলে জানায় স্নেহা।

এদিকে মেয়ের এই সাফল্যে খুশি মা প্রতিমা দেবী। তিনি জানান, সামান্য এই চায়ের দোকান করে কোন রকমে সংসার চালান। একদিকে যেমন চায়ের দোকান সামলানোর পাশাপাশি সংসারের হাল ধরেছেন তেমনি মেয়ের পড়াশোনার খরচ যোগাচ্ছেন। কিন্তু যেখানে অর্থের অভাবে স্বামীর চিকিৎসায় করাতে পারছেন না সেখানে আগামী দিনে কি ভাবে মেয়ের পড়াশোনার খরচ যোগাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।

স্নেহার এই সাফল্যে বেজায় খুশি তার কাকা। তিনি বলেন, ভাতিজির এই সাফল্যে বংশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এমন ভাবেই তার কাকুও অংকে ১০০ তে ১০০ এনেছিল। সেই সঙ্গে তিনি চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, নাম উজ্জ্বল করেছে তবে ভাস্তির পড়ার খরচ যোগানো তাদের মতো মানুষদের সামর্থ নেই। তাই তারা সরকারের কাছে ভাস্তির আগামী দিনের পড়াশোনার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন জানান।

বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন নিচের লিংকে

https://www.youtube.com/embed/x5mzUxaQ6iA